চর্মরোগের নিম পাতার ব্যবহার
পেজ সূচিপত্রঃ
চর্মরোগের সাধারন ধরনঃ
- একজিমা(Eczema): ত্বকের লালচে ফুসকুড়ি,চুলকানি।
- ফুসকুড়ি ও ব্রণ(Acne & pimples): ত্বকের অতিরিক্ত তেল বা ব্যাকটেরিয়ার কারণে।
- দাগ ও সংক্রমণ(Skin Infection & Scars): ক্ষুদ্র ক্ষত থেকে বড় সংক্রমণ।
- খুশকি ও ড্যান্ড্রাফ(Dandruff): ত্বকের শুকনো বা তেলযুক্ত সমস্যা।
- নিম পাতা নিয়মিত ব্যবহার এই সমস্যাগুলোর উপসর্গ হ্রাস করে এবং ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে সুস্থ রাখে।
আরও পড়ুনঃ নিমগাছকে কেন প্রকৃতির ওষুধের ভান্ডার বলা হয়
নিম পাতার বৈজ্ঞানিক ও প্রাকৃতিক গুণাবলীঃ
নিম পাতার গুণাবলী প্রচুর । এর প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলো হলোঃ
- আন্টি-ব্যাকটেরিয়ালঃ ত্বকের ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি রোধ করে।
- আন্টি-ফাঙ্গালঃ ছত্রাক জনিত সংক্রমণ দূর করে।
- অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরিঃ প্রদাহ ও লালচে ভাব কমায়।
- অ্যান্টি অক্সিডেন্টঃত্বকের কোষ পুনরুজ্জীবিত করে।
- ত্বক পরিষ্কার ও উজ্জ্বলকরণঃনিয়মিত ব্যবহার ত্বককে মসৃণ ও উজ্জল রাখে।
চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহারঃ
নিম পাতার ব্যবহার বিভিন্ন ভাবে করা যায়:
(ক) নিম পাতার পেস্টঃ
- কয়েকটি তাজা নিমপাতা ধুয়ে মিহি করে পেস্ট তৈরি করুন।
- আক্রান্ত স্থানে ২০-৩০ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে নিন।
- সপ্তাহে ৩-৪ বার ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যাবে।
(খ)নিম পাতা ও নারকেল তেলের মিশ্রণঃ
- নিম পাতা পেস্টের সাথে কয়েক ফোটা নারকেল তেল মিশিয়ে ব্যবহার করুন।
- ত্বকের শুকনো ভাব কমায় এবং প্রাকৃতিক আর্দ্রতা প্রদান করে।
(গ) নিম পাতা চা বা ওয়াশঃ
- নিমপাতা চা তৈরি করে ঠান্ডা হলে ত্বক পরিষ্কারের জন্য ব্যবহার করতে পারেন।
- এটি ত্বককে ব্যাকটেরিয়া মুক্ত রাখে এবং প্রভাব প্রদাহ কমায়।
(ঘ) নিম তেলের ব্যবহারঃ
- বাজারে পাওয়া ১০০% শুদ্ধ নিন তেল আক্রান্ত স্থানে সরাসরি লাগাতে পারেন।
- এটি সংক্রমণ রোধ করে এবং ত্বকের ক্ষত দ্রুত সুস্থ করে।
নিয়মিত ব্যবহারের টিপসঃ
প্রতিদিন সকালে বা রাতে ত্বক পরিষ্কার করার পর নিম পেস্ট বা তেল ব্যবহার করুন।
- ফুসকুড়ি বেশি হলে সপ্তাহে ৪-৫ বার ব্যবহার করতে পারেন।
- শিশু ও বৃদ্ধের ত্বকে প্রথমে ছোট অংশে পরীক্ষা করে দেখুন।
- রাসায়নিক ক্রিমের সাথে ব্যবহার করার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
নিম পাতার অন্যান্য স্বাস্থ্য উপকারিতাঃ
নিম শুধুই চর্মরোগে নয়, শরীরের জন্যও উপকারী।
- রক্ত পরিষ্কারক:নিম পাতার রস বা পাতা চা রক্ত পরিষ্কার রাখে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে: নিম পাতার গুণ শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে।
- দাঁত ও মুখের স্বাস্থ্য: নিমপাতা দিয়ে দাঁত ঘষলে মাড়ির সমস্যা কমে।
আরও পড়ুনঃ আরো কি কি কাজে নিম পাতা ব্যবহার করা যায়
সতর্কতাঃ
- অনেক সময় নিমের অতিরিক্ত ব্যবহার ত্বক শুকনো বা র্যাশ সৃষ্টি করতে পারে।
- গর্ভবতী বা শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহারের আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
উপসংহারঃ
চর্মরোগ নিয়ে চিন্তিত না হয়ে, প্রাকৃতিক ও নিরাপদ সমাধান হিসেবে নিম পাতার ব্যবহার একেবারে কার্যকর। নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক সুস্থ,পরিষ্কার ও উজ্জ্বল থাকে। ত্বকে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ন্ত্রণে এবং সংক্রমণ রোধে নিম পাতার গুণাবলী অন্যান্য।
চর্মরোগে নিম পাতার গুণাগুণ সত্যিই অনেকটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত । আমার মত নিমপাতা ত্বকের জন্য প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। তাই রাসায়নিক ওষুধের পরিবর্তে প্রাকৃতিক উপায়ে সুস্থ থাকতে চাইলে নিম পাতার ব্যবহারকে জীবনের অংশ করে তুলুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url